শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৮ অপরাহ্ন

মৌলিক কিছু সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা গণতন্ত্রের জন্য শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে পারবে না : জামায়াত আমির

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৬ সময় দেখুন

ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’-এ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, মৌলিক কিছু সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা গণতন্ত্রের জন্য শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে পারবে না। একই সঙ্গে তিনি তিনটি শর্ত পূরণের কথা বলেছেন। এই তিন শর্ত পূরণ ছাড়া নির্বাচনের সময়সীমা মার্চ-ফেব্রুয়ারি কোনো কিছুই ঠিক থাকবে কি না সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সংস্কারগুলো সাধন না করে যেই নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন গণতন্ত্রের কোনো ভিত্তি রচনা করতে পারবে না। আমরা নির্বাচনের দাবি করতে পারি, দিনক্ষণ ঠিক করে দিতে পারি না।’সফরের সময় তার কাছে বিদেশিরা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জানতে চেয়েছেন বলে জানান ডা. শফিকুর রহমান।

 

জামায়াতের আমির বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির সামনে ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। তারা মনে করেন, আনুষঙ্গিক প্রস্তুতির জন্য, সংস্কারের জন্য, বিচারের জন্য এই সময়টা গ্রহণযোগ্য। তবে এই সময়সীমা যাতে অতিক্রম না করে, তারা সেই বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।

 

জামায়াত আমির তাদের বলেছেন, ‘অনেক ত্যাগ ও চেষ্টার বিনিময়ে যে পরিবেশ এসেছে, সেই পরিবেশ তিনটি ম্যান্ডেটরি জিনিস দাবি করছে। প্রথম হলো দৃশ্যমান, গ্রহণযোগ্য, মৌলিক সংস্কার। কিছু সুনির্দিষ্ট জায়গা আমরা মেনশন (উল্লেখ) করেছি, যা এর আগে আমরা জাতির সামনে পেশ করে যাচ্ছি।

 

‘আমরা বলেছি, সংস্কারগুলো সাধন না করে যেই নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন গণতন্ত্রের কোনো ভিত্তি রচনা করতে পারবে না। বরং অতীতের যেসব নির্বাচন দেশ ও জাতির কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য হয়নি, সে রকম হয়তো আরেকটা খারাপ নির্বাচন হবে। আমরা ওই নির্বাচন চাই না।’বলেন জামায়াত আমির।

 

হাজার মানুষের প্রাণ ও পঙ্গুত্বের বিনিময়ে অর্জিত পরিবর্তিত বাংলাদেশে অবশ্যই সংস্কার সাধন করতে বলে মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান সংস্কারের অংশীজনদের বিষয়েও কথা বলেন।

 

জামায়াত আমির বলেন, ‘ সংস্কারের প্রধান অংশীজন হলো রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলো যত তাড়াতাড়ি ও আন্তরিকতার সঙ্গে সংস্কারে সহযোগিতা করবে, তত তাড়াতাড়ি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। সংস্কার যদি না হয়, তাহলে সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির বিষয়ে দেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, সেটি পূরণ না হয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে পড়বে। আর তার দায় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে।’

 

দ্বিতীয় শর্ত সম্পর্কে জামায়াতের আমির বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে হত্যা-নির‌্যাতন, হামলার দায়ীদের দৃশ্যমান বিচার জাতিকে দেখাতে হবে, যাতে খুনিদের বিচারের বিষয়ে জাতির আস্থা ফিরে আসে।

 

রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের প্রতি সম্মান করার পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়টি জামায়াত আমিরের তৃতীয় শর্ত। তিনি বলেন, জিতে গেলে নির্বাচন সুষ্ঠু, আর হেরে গেলে দুষ্ট—এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনটা এমন হতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে। এ জন্য সবার আলাপ-আলোচনা ও সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। এটি সরকারের তরফ থেকে হতে পারে, রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব উদ্যোগে হতে পারে, সিভিল সোসাইটি (সুশীল সমাজ) থেকেও হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জামায়াতের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, সাক্ষাতে তারা রোজার আগে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে বলেছেন। তিনি আবার বলছেন, এটা তখনই হতে পারে, যখন ওই তিনটি শর্ত পূরণ হতে পারে।

 

জামায়াতের আমির বলেন, ‘শর্ত পূরণ ছাড়া মার্চ, ফেব্রুয়ারি—কোনো কিছুই ঠিক থাকবে কি না, আল্লাহই ভালো বলতে পারবেন।’

 

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এ টি এম মাসুম, নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, মাওলানা আ ন ম শামসুল আলম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর