ঢাকা, ২৬ মার্চ ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই ভাষণে নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপ না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে হতাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গতকাল প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য রেখেছেন, তিনি সেখানে নির্বাচনের রোডম্যাপের বক্তব্য রাখেননি। ফলে আমরা অত্যন্ত হতাশ হয়েছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি ফ্যাসিস্ট সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর জাতির ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছে। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুম খুন নির্যাতন চালিয়েছে। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এ বিপ্লবের পর আমরা নতুন করে বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি। আমরা আশা করবো, ন্যূনতম সংসস্কার শেষে অন্তবর্তীকালীন সরকার দ্রুত নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।’ গতকাল প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম না বলাতেও হতাশা প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা হতাশ হয়েছি তার বক্তব্যে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম একবারের জন্যও উল্লেখ করেন নাই। কিন্তু এটাই ইতিহাস। আমরা চাই আওয়ামী লীগ যেমন ইতিহাস বিকৃত করেছে, তেমনি এখন আবার ইতিহাস বিকৃত না হোক। আমরা প্রকৃত ইতিহাস উপস্থাপনের মাধ্যমে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের ফিরে যাবো, তত দ্রুত সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে বলে আমরা আশা প্রকাশ করি। আমরা বিশ্বাস করি, অতিদ্রুত আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষে আমরা পৌঁছে যাবো।’
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্য নির্বাচন আয়োজনে বিএনপির আস্থা আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত অস্পষ্ট কথা। ডিসেম্বর থেকে জুন ছয় মাস, এতে কোনো রোডম্যাপ দেওয়া হয়নি। আমরা বারবার বলে আসছি, স্পষ্ট রোডম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচন, তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে তা কাটবে না।’
বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে না। বিএনপি জাতির স্বার্থে জাতিকে রক্ষা করার স্বার্থে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার স্বার্থে নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচিত পার্লামেন্ট এবং সরকারের কথা বলছে।’
জিয়াউর রহমানের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন নাই, একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করে ৯ মাস লড়াই করে বিজয় লাভ করেন। এই স্বাধীনতার জন্য আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আমাদের অসংখ্য মা-বোন তাদের সম্মান হারিয়েছেন। অসংখ্য ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে এ স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ থেকে ৫৪ বছর আগে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, দুর্ভাগ্যবশত সেই বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আমরা গড়তে পারিনি।’
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মজনুসহ দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
Leave a Reply