ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ০৯ মার্চ ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা থাকলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে বা ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে মিয়ানমারে একটি জাতীয় নির্বাচন করার পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির বর্তমান শাসক ও জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। শনিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার’ এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বেলারুশ সফর করছেন জান্তা প্রধান। শুক্রবার মিনস্কে দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেক্সজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, ‘২০২৫ সালের ডিসেম্বরে বা ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ৫৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের তালিকা জমা দিয়েছে।’এসময় জান্তা প্রধান নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বেলারুশের পর্যবেক্ষক দলকে আমন্ত্রণ জানান।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সুচির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল এবং জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তবে এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি দেশটির সাধারণ জনগণ। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এলে কঠোর হাতে তাদের দমন শুরু করে সামরিক বাহিনী।
অভ্যুত্থানের পর একই বছরের এপ্রিলেই ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেতৃত্বে নির্বাচনে জয়ী সদস্যরা জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করে, যাকে সংক্ষেপে বলা হয় এনইউজি। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরাও এতে যোগ দেয়। সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে থাকা বিদ্রোহী বাহিনীর সঙ্গে মিলে তারা প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করে এবং সব গোষ্ঠীর সমন্বয়ে তৈরি করে ‘পিপল ডিফেন্স ফোর্স’।
সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ নতুন মাত্রা পায় উত্তরাঞ্চলের তিনটি বিদ্রোহী বাহিনী এক হয়ে আক্রমণ শুরুর পর। ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর একজোট হয়ে সুসংগঠিতভাবে হামলা চালায় দেশটির উত্তরের শান রাজ্যের জাতিগতভাবে সংখ্যালঘু তিনটি বিদ্রোহী বাহিনী, যাদের একসঙ্গে ডাকা হচ্ছে ‘থ্রি গ্রুপ অ্যালায়েন্স’ নামে। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) নিয়ে এই জোট গঠন করা হয়েছে।
এদিকে অক্টোবরে হামলা শুরু হবার পর থেকে হাজার হাজার সৈন্য তাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিদ্রোহী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দখলে থাকা অনেক শহর ও এলাকা বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে।
অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ শহরে সেনাবাহিনীর ব্যর্থতার কারণে ৬৭ বছর বয়সি জান্তা প্রধানের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিদ্রোহীদের কাছে লড়াইয়ে ব্যর্থতার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও কিছু ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারানোর বিষয়টি মেনে নিয়েছে জান্তা সরকার। ফলে বহুমুখি চাপে রয়েছে সেনাবাহিনী।।
Leave a Reply