শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:১৬ অপরাহ্ন

অপারেশন ডেভিল হান্ট : এইড টু সিভিল পাওয়ারে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন আছে : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৩ সময় দেখুন

ঢাকা, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ রবিবার দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই অভিযানে পুলিশকে অন্যান্য বাহিনী সহযোগিতা করবে।

 

সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, “পুলিশ বাহিনীর অনেক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে মানসিক ও স্থাপনার ক্ষতি হয়েছে। বহু থানা পুড়ে গেছে। এসব কারণে এইড টু সিভিল পাওয়ারে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন আছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা অনেকগুলো পরিকল্পনা নিয়েছি। যার বেশ কিছু চলমান রয়েছে। পাশাপাশি আগামীতে কিছুটা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। যার মধ্যে একটি গতকাল আমরা ঘোষণা দিয়েছি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ করা হবে।”

 

তিনি বলেন, “যৌথভাবে কিছু কাজ করা হবে। সেই কাজের মধ্যে অন্যতম হলো যেসব ব্যক্তি দেশের স্থিতিশীলতাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, এটাকে আমরা আইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করব। এ জন্য সব বাহিনীকে প্রস্তুত করা হয়েছে, দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

 

নাসিমুল গনি বলেন, “আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আগে যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো আমরা তো ওই পথে হাঁটতে পারব না। আমাদের আইনের মধ্যে থেকে কাজটা করতে হবে। সে জন্য আমরা চেষ্টা করছি, আইন প্রয়োগের সঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে আইন প্রয়োগ করা হবে।”

 

তিনি আরও বলেন, “মানবাধিকার সমুন্নত রেখে আমরা আইন প্রয়োগ করতে চাই। কারণ এই মানবাধিকারের দাবিতেই কিন্তু আন্দোলন হয়েছে। আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য ভালো ভবিষ্যত রেখে যেতে পারি। ভালো একটি চর্চা তৈরি করতে চাই। আয়নাঘর যেন আর কোনো দিন তৈরি না হয়। এই লক্ষ্যে আগামী ১১ তারিখ আইন ও বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত ১৫০ জনের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব। সেখানে স্বরাষ্ট্র, আইন উপদেষ্টাসহ অনেক উপদেষ্টা, অ্যাটর্নি জেনারেল, আইজিপিসহ সবাই থাকবেন। এ দিন আমরা সবাইকে নিয়ে আইন প্রয়োগে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বে একটি কর্মশালা হবে। প্রথম ধাপে ঢাকা ও গাজীপুর নিয়ে হবে। পরবর্তীতে আগামী এক মাসের মধ্যে দেশের সব স্থানে সরাসরি কথা হবে।”

 

‘ডেভিল হান্ট’ ঘোষণার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “অনেক দুষ্কৃতকারী দেশে রয়ে গেছে। তারা দেশের স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করছে। এই জিনিসটা যেন না থাকে। আগে যৌথবাহিনী সব স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতো। এখন তারা বিভিন্ন স্থানে যাবে। এটা মূলত পুলিশের অভিযান। সেনাবাহিনী সিভিল অ্যাক্টের আওতায় তাদের সহযোগিতা করছে। প্রতিটি অপারেশনের নাম দেওয়া হয়। ফোকাস করার জন্য এই নামকরণ। এই অপারেশনে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটদের যে ক্ষমতা আছে তারা সেটা ব্যবহার করবেন।”

 

পুলিশের কাছে মানুষ নিরাপত্তা চায় কিন্তু পুলিশ এখনো সেই অবস্থায় আসে নি। পূর্ণরূপে ফিরতে কত সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে এই সিনিয়র সচিব বলেন, “যেসব দেশে বিপ্লব হয়েছে, সেখানে পরাজিত শক্তিকে কেউ রাখে নাই। আমরা অতটা অমানবিক হতে পারিনি। আমরা বিভিন্নভাবে তাদের ছাড় দিয়েছি। যারা বেশি জড়িত ছিল তারা অনেকে পালিয়ে গেছে। এই অবস্থায় একটি বাহিনীর মনোবল গড়ে তোলা ও আগের শৃঙ্খলার অবস্থায় ফেরাতে সময় লাগবে। এখন কাজগুলো এভাবে করা যায়। আমরা ওই বিষয়গুলো চিন্তাই করি নাই। সেই পরিকল্পনা থেকে এই অপারেশন।”

 

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ কিছু পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন, এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “অবশ্যই আমরা ওই কর্মকর্তার বিষয়গুলো তদন্ত করছি। সে (বেনজীর) কার কার সঙ্গে কথা বলেছে সেগুলোও তদন্ত করা হচ্ছে। যারা ওইখান (বিদেশ) থেকে কাউন্সিলিং করছে, তারাই আবার দেশে বসে টাকা দিয়েও কাউন্সিলিং করেছিল।”

 

শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া ভুল ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জেল থেকে ছাড়ার ক্ষমতা আমার নাই। একমাত্র রাষ্ট্রপতির আছে। রাষ্ট্রপতি তো কাউকে ক্ষমা করে নাই। অনেক লোকে মনে করেছে ওই (আওয়ামী লীগ) সময়ে বের হলে সমস্যা হবে। তারা ২০-২৫ বছর জেলে ছিল। হতে পারে সন্ত্রাসী। পরবর্তীতে যদি কোনো অপরাধ করে তাহলে আবার ধরব।”

 

চার পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। আরও অনেকে গ্রেপ্তার হতে পারে।”

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর