রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন

কোন বন্ধু রাষ্ট্র জনগণের হত্যাকারীকে আশ্রয় দিতে পারে না : বলেছেন, শামসুজ্জামান দুদু

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৪৬ সময় দেখুন

ঢাকা, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে ফেলানী হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, কোনো বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিতে পারে না।

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশে যাতে ভালো নির্বাচন না হয়, রাজনৈতিক সরকার যাতে ক্ষমতায় না আসে সেই চেষ্টা ভারত চালিয়ে যাচ্ছে। ওই ফাঁদে আপনারা পা দেবেন না। ওই ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। হাসিনা ওই ফাঁদে পা দিয়েছিল বলে সে নির্বাচনের বাইরে চলে গিয়েছিল। ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের কথা যেটা বলেছেন, এই বছরের শেষে এবং আগামী বছরের শুরুতে সেটা আমরা সমর্থন জানাই। ওই সময়ের মধ্যে আমরা যদি নির্বাচনটা করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের যে সংকট তৈরি হয়েছে, বাজারে আগুন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থা, জনগণের মধ্যে অস্থির অবস্থা এগুলো কাটিয়ে উঠতে আমাদেরকে নির্বাচনের দিকে হাঁটতে হবে। আমরা যদি এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে পারি তাহলে আমার প্রত্যাশা আমরা এসব সংকট থেকে মুক্ত হব। তাই এখন সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।’

 

কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে মনে করে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে এমন কোনো পদক্ষেপ এই পর্যন্ত নেইনি, যেটা বন্ধু রাষ্ট্রের প্রতি কোনো রেশ নিয়েছে। কিন্তু ভারত বাংলাদেশকে বন্ধু রাষ্ট্র মনে করেনি। আজ ৫৩ বছরের ঘটনাবলিকে যদি আমি সামনে আনি তাহলে মনে হবে, ভারত এ যাবৎকালে যখনই যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটা কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ, বন্ধু রাষ্ট্র নিতে পারে না। অথচ ভারত দাবি করে তারা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র।’

 

১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা যে অস্ত্রগুলো ফেলে গিয়েছিল সেগুলো ভারতের সেনাবাহিনী লুটপাট করে নিয়ে গেছে। দেশের সম্পদ নানাভাবে লুটপাট করে নিয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম নেতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে উন্নত করার লক্ষ্যে। ভুটান, নেপাল, আফগানিস্তান বন্ধুত্ব সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং সার্ক গঠন করেন। কিন্তু ভারতের অসহযোগিতার কারণে সার্ক বিলুপ্তির পথে।’

 

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘গত পাঁচ মাস আগে ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, সেই হত্যাকারী স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে আরেকটি হত্যাকারী দেশ যে ফেলানীকে হত্যা করেছে, সীমান্তে বাংলাদেশিদেরকে হত্যা করছে। আমাদেরকে বন্ধুত্ব দাবি করা রাষ্ট্র ভারত আমার দেশের সাধারণ জনগণের হত্যাকারীকে আশ্রয় দিয়েছে।’

 

তিনি বলেন, ‘বাঙালি বীরের জাতি যদি একবার ভারতের এই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত রেহাই পাবে এটা আমি মনে করি না। এই জাতি প্রশিক্ষিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছে। সাত দিন দশ দিন যুদ্ধ করে ভারত আমাদেরকে স্বাধীন করে দিয়েছে এটা তারা বলে। তাদের ১০-১৫ হাজার সৈন্য মারা গেছে তারা দাবি করে আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, এই ১৪-১৫ হাজার মানুষ আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছে। এই দেশে ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর এই ৩০ লক্ষ শহীদ এদেশের নাগরিক। ভারতের দাবি অসার দাবি, ভারত যে দাবি করে সেটা কোনো বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের দাবি নয়। ফেলানী একটা কিশোরী তাকে গুলি করে হত্যা করে পাঁচ দিন কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিল। শেখ হাসিনা যেমন ক্ষমতায় থাকার জন্য তামাশা করেছে ভারত ও ফেলানী হত্যা বিচারে তামাশা করেছে। একজন খুনিকে তারা মুক্ত করে দিয়েছে।’

 

দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কৃষক দল নেতা এসকে সাদী, আব্দুর রাজী প্রমুখ।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর