শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন

জাতি একবারই স্বাধীন হয়, একাত্তরের সঙ্গে চব্বিশের তুলনা চলে না : বলেছেন,  নুরুল হক নুর

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৫১ সময় দেখুন

ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বের ২০২৪ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ মঙ্গলবার গণঅধিকার পরিষদের দলীয় কার্যালয় আলরাজি কমপ্লেক্সে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, জাতি একবারই স্বাধীন হয়, একাত্তরের সঙ্গে চব্বিশের তুলনা চলে না। বাহাত্তরের সংবিধান বাতিলের কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন । বলেন, বিভিন্ন সময় সংবিধান ১৭ বার সংশোধন করা হয়েছে। এটা বাতিলের প্রয়োজন নেই বরং সবার সঙ্গে আলোচনা করে সংশোধন করা যায়। এসময় নতুন বাংলাদেশ গঠনে অতীতের সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে একীভূত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত জানান তিনি।

 

নুরুল হক নুর বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে সকল ব্যবধান ভুলে গণঅধিকার পরিষদকে এক করা হয়েছে। দু’একজন এর বাইরে থাকতে পারে। তিনি আশা করেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এরা সবাই যুক্ত হবেন।

 

কোটা আন্দোলন ও জুলাই আন্দোলনে আহত সবাইকে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সরকারের নানা দুর্বলতা লক্ষ্য করছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এখনো উন্নতি হয়নি। আওয়ামী হাইকমান্ডের লোকজন পালিয়ে যাচ্ছে, সচিবালয়ে আগুন আমাদের হতাশ করছে। শিক্ষার্থীরা একটি ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ নিয়েছিলো। প্রধান উপদেষ্টা সেটিকে সার্বজনীন করার উদ্যোগ নিয়ে জাতিকে একটি বিভাজন থেকে রক্ষা করেছেন। আগামীর নতুন বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই। এই পরিস্থিতিতে যেকোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত দেশকে পিছনে নিয়ে যাবে। দেশ ও জাতিকে রক্ষায় ঐক্য ও সংহতির ভিত্তিতেই দেশ চালাতে হবে।

 

এসময় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা রাজপথে ছিলাম। একসঙ্গে পথচলতে গিয়ে আমাদের মতপার্থক্য হয়েছে, সেই মতপার্থক্যের আজ অবসান ঘটতে শুরু হয়েছে। জনগণের কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ গঠনে সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে আমরা অতীতের ন্যায় একীভূত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে, তিনি জাতিকে আরেকটি বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র সকল দল, সংগঠন ও অংশীজনদের নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে করতে হবে। কারণ এই গণঅভ্যুত্থানের মালিক এই দেশের ১৮ কোটি জনগণ। জনগণকে বাদ দিয়ে এই দেশে আর কোন রাজনীতি হবেনা।

 

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, ৪৩ তম বিসিএস বাদ পড়াদের গেজেট ভুক্ত করতে হবে। শেখ হাসিনার সময়ে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিএনপি জামাত করার কারণে অনেকের গেজেট আটকানো হতো, ঠিক একই কায়দায় এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও আটকানো হচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। সরকারি চাকরিতে পুলিশ ভেরিফিকেশন পুরোপুরি বাদ দেওয়া দরকার। আমরা দাবি জানাচ্ছি নিদিষ্ট অভিযোগ ব্যতীত কারো গেজেট যেনো না আটকানো হয়। ৪৩ বিসিএস থেকে বাদ পড়া ১৬৮ জনকে গেজেট ভুক্ত না করা হলে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে যদি রাজপথে নামতে হয় সেটিও আমরা করবো। বৈষম্যে বিরুদ্ধে আন্দোলনই ছিল কোটা আন্দোলনের মূল স্পিরিট সেখানে কোনো অন্যায় বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।

 

২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ফারুক হাসান বলেন, গণঅধিকার পরিষদ তরুণদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। মাঝখানে কিছু মতপার্থক্যের কারণে গণঅধিকার পরিষদ আলাদাভাবে পথ চলতে শুরু করে। কিন্তু ২০২৪ সালের বিপ্লবে গণঅধিকার পরিষদের উভয়ে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাই দেশ ও জাতির প্রয়োজনে গণঅধিকার পরিষদের উভয় নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ অনুভব করার জায়গা থেকে আজকে থেকে গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গণঅধিকার পরিষদ আজকে থেকে একটিই যার ভিত্তি কোটা আন্দোলন।

 

গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) -এর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসানের নেতৃত্বে পরিচালিত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ, নির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দরা।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর