শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:২৭ অপরাহ্ন

না ফেরার দেশে চলে গেলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৩৮ সময় দেখুন

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ৩১ ডিসেম্বের ২০২৪ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): না ফেরার দেশে চলে গেলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। রবিবার স্থানীয় সময় বিকালে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্লেইনসে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়েছে। বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। এ খবর নিশ্চিত করেছে জিমির প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান কার্টার সেন্টার।

 

১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন জিমি কার্টার। গত অক্টোবরেই শততম জন্মদিন পালন করেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে জর্জিয়া প্রদেশের গভর্নর ছিলেন জিমি। তার আগে জর্জিয়া স্টেট সেনেটের সদস্যও ছিলেন। তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে ১৯৪৩ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত সক্রিয় সার্ভিসে ছিলেন।

 

১৯৪৬ সালে রোজালিন স্মিথের সঙ্গে বিয়ে হয় জিমি কার্টারের। গত বছরের নভেম্বরে প্রয়াত হন তার স্ত্রী। এক বছরের মাথায় প্রয়াত হলেন জিমি।

 

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জিমি কার্টারের ছেলে চিপ কার্টার বলেন, ‘আমার বাবা একজন নায়ক ছিলেন। শুধু আমার কাছেই নন, যারা শান্তি, মানবাধিকার এবং নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় বিশ্বাস করেন, এমন সবার কাছেই তিনি নায়ক ছিলেন।’

 

এদিকে জিমি কার্টারের প্রয়াণে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ব্যারাক ওবামাসহ বহু নেতা শোক জানিয়েছেন। জিমির স্বাক্ষরিত তাদের একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে বাইডেন লিখেছেন, ‘৬ দশক ধরে জিমি কার্টারকে বন্ধু বলে ডাকার সৌভাগ্য পেয়েছি জিল এবং আমি। তবে জিমির সব থেকে বড় কৃতিত্ব ছিল আমেরিকা এবং গোটা বিশ্বে এমন কয়েক লাখ লোক হবে, যারা কখনো জিমির সঙ্গে দেখা করেননি, তাও তারা মনে করতেন জিমি তাদের বন্ধু।’

 

রাজনীতিকভাবে ডেমোক্র্যাট দলীয় জিমি এক মেয়াদেই প্রেসিডেন্ট থাকতে পেরেছিলেন। তবে সেই পদ খোয়ানোর পরও বিশ্ব রাজনীতিতে তার প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। জিমির প্রেসিডেন্ট থাকার সময় মার্কিন মুলুকে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছিল। তবে নিজের প্রেসিডেন্সিতে ইজরায়েল এবং মিশরের মধ্যকার যুদ্ধ থামিয়েছিলেন তিনি।

 

এদিকে জিমির সময়কালেই প্রথমবারের মতো চীনের সঙ্গে আমেরিকার পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হয়। তিনি তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার পূর্বতন প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এই আবহে আমেরিকা এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। এমনকি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন আফগানিস্তান দখল করে, তখন চীনকে মিলিটারি সরঞ্জাম সরবরাহে সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন এই জিমি।

 

তবে ১৯৭৯ সালে ইরান বিদ্রোহের সময় ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন জিমি। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তেহরানে আটকে পড়া মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের উদ্ধার করতে পারেনি আমেরিকা। পরে রোনাল্ড রিগান হোয়াইট হাইজে আসার পর তাদের উদ্ধার করা হয়েছিল এক রোমহর্ষক গোপন অভিযানে।

 

১৯৮০ সালে অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে হার হজম করতে হয়েছিল জিমিকে। তার প্রতিপক্ষ রোনাল্ড রিগান ৪৮৯ ইলেক্টোরাল ভোট নিশ্চিত করেছিলেন সেই নির্বাচনে। জিমি কার্যত উড়ে গিয়েছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হেরে যাওয়ার পর তিনি প্রকৃত পক্ষেই একজন কূটনীতিবিদ হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৯৪ সালে তিনি উত্তর কোরিয়ায় গিয়ে কিম সুংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন।

 

১৯৯৯ সালে তাইওয়ান গিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লি টেং-হুইয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন জিমি। এছাড়া গত প্রায় সাড়ে চার দশকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা জারি রেখেছিলেন। এই আবহে গত ২০০২ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর