ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ৩০ ডিসেম্বের ২০২৪ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান বিধ্বস্তে ঘটনায় ১৭৯ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ১৭৫ জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু নিয়ে জেজু এয়ারের যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এর মধ্যে মাত্র দুজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৭ মিনিটে সিউলের প্রায় ২৮৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে দক্ষিণ জিওলা প্রদেশের মুয়ান কাউন্টির মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটি ল্যান্ডিং গিয়ার স্থাপন না করে অবতরণের চেষ্টা করছে। বিমানটি মাটিতে ছিটকে পড়ে, বিস্ফোরণের আগে একটি কংক্রিটের দেয়ালে বিধ্বস্ত হয় এবং আগুন লেগে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার করায় মাত্র দুই ক্রু বেঁচে যান। তাদের মোকপোতে পৃথক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের আঘাত জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল না।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ বলেছে, অবতরণের সময় পাখির আঘাতের কারণে উড়োজাহাজটির ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি দেখা দিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মুয়ানের ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিমানটি দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর যাত্রীরা বিমান থেকে ছিটকে পড়েন। বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। বিমানটি প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং নিহতদের সনাক্ত করা কঠিন।’
জেজু এয়ার জানিয়েছে, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমানটিতে ছয়জন ক্রু সদস্যসহ মোট ১৮১ জন আরোহী ছিলেন, যা রাত দেড়টায় ব্যাংকক থেকে ছেড়েছিল। এটি সকাল রবিবার সকালে সাড়ে ৮টায় মুয়ানে পৌঁছানোর কথা ছিল। বিমানটিতে থাকা দুই থাই নাগরিক ছাড়া অধিকাংশ যাত্রীই কোরিয়ান।
এদিকে ১৭৯ যাত্রীর প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির বেসরকারি বিমান সংস্থা জেজু এয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কিম ই-বে ও অন্যান্যরা। সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশে নিয়ে মাথা অবনত করে ক্ষমা প্রার্থনা করতে দেখা যায় তাদের।
এসময় যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন সেসব পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান কিম ই-বে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে সমস্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক মুয়ান কাউন্টিকে একটি বিশেষ দুর্যোগ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছেন। কারণ তিনি অনুসন্ধান অভিযানে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ এবং দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
চোই শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের সম্ভাব্য সব ধরনের সরকারি সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
Leave a Reply