সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:০১ অপরাহ্ন

শহীদ পরিবারের সন্তান মিজানুর রহমান মজনুর বিরুদ্ধে সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের মিথ্যচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০২০
  • ২০০ সময় দেখুন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক অপপ্রচারের অভিযোগে ফরিদপুরের প্রবীণ সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।  বৃহস্পতিবার দুপুরে কালুখালী উপজেলা প্রেসক্লাবে এই সাংবাদিক সম্মেলন করেন মদাপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোঃ আজাহার আলী মোল্লা।

সাংবাদিক সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ আজাহার আলী মোল্লা বলেন, মজনুর দাদা মৃত আজিমউদ্দিন শেখ তার বড় ভাই মৃত সোহাতুল্লা শেখ। সোহাতুল্লা শেখের এক মাত্র ছেলে নাদের শেখকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্মমভাবে হত্যা করে এবং তার লাশ নিয়ে যায়। সে হিসেবে মিজানুর রহমান মজনু একজন শহীদ পরিবারের সন্তান। একজন শহীদ পরিবারের সন্তানকে নিয়ে কেন এবং কোন মহলের ইশারায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদার এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, সাংবাদিক প্রবীর সিকদার গত ২৮/০৬/২০২০ ইং তারিখে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে মদাপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্যাডে আমার ২০/০৪/২০১৬ইং তারিখের স্বাক্ষরিত একটি ‘প্রত্যয়নপত্র’ তুলে ধরে কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও রাজবাড়ী জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য মোঃ মিজানুর রহমান মজনু ও তার পরিবার সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার করেন, যা আদৌ সত্য নয়। আমি ঐরূপ কোন প্রত্যয়নপত্র প্রদান করিনি এবং কথিত প্রত্যয়নপত্রে প্রদত্ত স্বাক্ষর আমার নয়। এ ব্যাপারে আমি গত ২৮/০৬/২০২০ইং তারিখে কালুখালী থানায় একটি জিডি নং-৮৩৪ করেছি। কথিত প্রত্যয়নপত্রে সাংবাদিক প্রবীর শিকদার আমার নাম ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ নেতা  মিজানুর রহমান মজনু ও তার পরিবার সম্পর্কে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।

তিনি বলেন, মজনুর পরিবার কখনোই স্বাধীনতা বিরোধী কোন কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না।  বরং ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মদাপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধাদের মজনুর দাদা মৃত আজিমুদ্দিন শেখ, পিতা মৃত ইউসুফ হোসেন শেখ ও চাচা মৃত আবু হাসান শেখসহ তাদের পারিবার বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছিলেন। যুদ্ধকালীন ও পরবর্তী সময়ে ঐ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের তারা নিজেদের পরিবারের মতো দেখেছেন এবং তাদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। আমার জানা মতে এখনও ২টি হিন্দু পরিবার তাদের দেয়া জমির উপর বসবাস করছেন। মজনুর পরিবার কখনোই চাঁদাবাজী, খুন-খারাবী ও লুণ্ঠনের মতো কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিল না এবং এখনও নাই। আমার মুক্তিযোদ্ধারা সব সময়ই তার পরিবারের নিকট থেকে নানা ধরণের সাহায্য-সহযোগিতা পেয়ে আসছি।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্যাড ব্যবহার ও আমার স্বাক্ষর জাল করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একটি পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব দানকারী আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বিনষ্টের চক্রান্তে প্রবীর সিকদার লিপ্ত রয়েছেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে উপনীত হওয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি প্রবীর সিকদারের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছি।

কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাব বলেন, সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের মতো কিছু সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তি আওয়ামী লীগের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে চাচ্ছে। এদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবী করছি।

কালুখালী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সার্জেন্ট(অবঃ) মোঃ আকামত আলী মন্ডল বলেন, আমি কখনোই দেখিনি মিজানুর রহমান মজনু ও তার পরিবারের দ্বারা দল ও এলাকাবাসীর কোন ক্ষতি হয়েছে। এটা খুব দুঃখজনক ব্যাপার যে আমাদের একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে একজন সাংবাদিক মিথ্যা অপপ্রচার করেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি কলংকিত করে তুলতে চেয়েছিলেন। যদি আমরা আজকে এই সংবাদ সম্মেলন না করতাম তাহলে সাধারণ মানুষ কিন্তু সেটা বিশ্বাস করতো।
সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল খালেক মাস্টার বলেন, সাংবাদিক প্রবীর শিকদার যে মিথ্যা অপপ্রচার করেছেন তা সস্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। কারণ আমার প্রতিবেশী মজনুর পরিবার সম্পর্কে আমি খুব ভালোভাবেই জানি ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ করি এবং ১৯৭০ সালে যখন নির্বাচন হয় তখন আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগের পক্ষে মজনুর পরিবার কীভাবে কাজ করেছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মদাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম রোকনুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধাগণ উপস্থিত ছিলেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর