রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন

উল্লাপাড়ায় পূর্বশক্রতার জেরে খুন হন মা ও ছেলে : বললেন, সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ৩০ জুন, ২০১৯
  • ৪৩৫ সময় দেখুন

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় পূর্ব শক্রতার জেরেই পরিকল্পিতভাবে মা ও ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্যকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা পুলিশকে এমন তথ্য দিয়েছেন। আজ রোববার সকালে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর গ্রামে মাতব্বরি শুরু করেন সাবেক সেনা সদস্য আলতাব হোসেন মুকুল (৬০)। গ্রামে মসজিদ থাকলেও নিজ বাড়ির আঙিনায় পৃথক একটি মসজিদও তৈরি করেন তিনি। ধীরে ধীরে গ্রাম্য শালিসেও নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন আলতাব। একপর্যায়ে স্থানীয় দুটি বালু মহাল নিয়েও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এসব বিষয় নিয়ে প্রতিপক্ষ মাতব্বর আবুল কালাম আজাদের (৭০) সঙ্গে মামলা মোকদ্দমায়ও জড়িয়ে পড়েন ।

এ অবস্থায় আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে এবং আলতাব হোসেনকে ঘায়েল করতেই সহযোগিদের সঙ্গে নিয়ে এই হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করেন প্রতিপক্ষ আবুল কালাম আজাদ। পরিকল্পনা মাফিক ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা রিজিয়া বেগম (৯০) ও ছেলে আলতাফ হোসেন মুকুলকে নিজ ঘরের মধ্যে নৃশংসভাবে খুন করা হয়।

বুধবার গভীররাতে উল্লাপাড়া উপজেলার মহেশপুর গ্রামের আলোচিত এ জোড়া খুনের ঘটনার তিনদিনেই মূল রহস্য উদঘাটন এবং পরিকল্পনাকারিসহ কিলিং মিশনে থাকা ৭ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়াও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ২টি চাপাতি, ২টি ছুরি ও ১টি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার এ হত্যাকান্ডের মুল পরিকল্পনাকারী একই গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৭০), সহযোগী আহসান উল্লাহর ছেলে রহমত উল্লাহ পান্না (৩৮), মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫৭) ও দুলাল সরকারের ছেলে মনছুর আলী সরকারকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়।

শনিবার তাদের আদালতে হাজির করা হলে মূল পরিকল্পনাকারী আবুল কালাম আজাদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন, তাদের গ্রামের মসজিদ ও বালু মহাল নিয়ে আলতাব হোসেন মুকুলের সাথে বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলছিল। আলতাব হোসেনকে ঘায়েল করতেই কয়েকদিন আগে হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা করা হয়। হত্যাকান্ড সংগঠনের জন্য প্রত্যেকেই ৩ হাজার করে টাকা চাঁদা দেন। পরিকল্পনা মাফিক ঘটনার দিন রাতে চাপাতি, ছুরি ও রামদা দিয়ে আলতাব হোসেন এবং তার মাকে এলোপাথারি জখম এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে উভয়ের পায়ের রগ কাটা হয় বলে পুলিশ সুপার ব্রিফিংয়ে জানান।

এদিকে, গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্যমতে আজ রোববার ভোরে অভিযান চালিয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেয়া আরও ৩জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরা হলেন, একই গ্রামের শাহজাহান প্রামানিকের ছেলে হাফিজুর প্রাং (৩৫), ওসমান প্রামানিকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ওরফে দুলাল প্রাং (৫০) ও আজিজুল হকের ছেলে সাইদুর রহমান বাচ্চু (৩৮)। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদের দেয়া তথ্যমতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি, ছুরি ও রামদা উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার নিহতের স্ত্রী শামীম আরা বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে মামলা দায়ের করেন। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী জানিয়েছেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর