শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:১৯ অপরাহ্ন

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কি বিদায় নিচ্ছেন রোডস ?

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৯
  • ৪৯৪ সময় দেখুন

২০১৪ সালে বাংলাদেশ দলের কোচ হয়ে এসেছিলেন চান্ডিকা হাথুরুসিংহে। এরপর ২০১৭ সালে চাকরি ছেড়ে দেয়ার আগ পর্যন্ত একের পর এক সাফল্য এনে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। কিন্তু, সব সফলতা ছাপিয়ে বারবার সামনে এসেছে তার কঠোরতা আর একগুঁয়েমি মনোভাব। আর তাই হাথুরুর বিদায়ের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করে স্টিভ রোডসকে নিয়ে আসা হয়। নরম স্বভাবের এ ইংলিশ কোচকে আগাগোড়া ‘ভালোমানুষ’ হিসেবে সবাই স্বীকৃতি দিবে। কিন্তু, কোচ হিসেবে তার যোগ্যতা এবং দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর তাই, দেশের ক্রিকেটে নতুন গুঞ্জন, তবে কি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নিচ্ছেন রোডস।

হাথুরুসিংসের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল না কারো। তার হাত ধরে তরতর করে সফলতা আসছিল। কিন্তু তার কঠোরতা আর স্বৈরতান্ত্রীক মনোভাবের কারণে খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বোর্ডের অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে ঝামেলা তৈরি হয়েছিল। আর তাই বিদায় বেলায় বেশ তিক্ততা রেখে গেছেন এ লঙ্কান কোচ। সফলতা আসছে রোডসের অধীনেও। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সও মন্দ না। কিন্তু, দলের এ সাফল্যের পেছনে কোচের ভূমিকাকে বেশি কৃতিত্ব দিতে চাচ্ছেন না কিছু খেলোয়াড় এবং বোর্ড কর্তা। তাদের মতে, কাউন্টি ক্রিকেটের কোচ হিসেবে ঠিকঠাক হলেও আন্তর্জাতিক লেভেলের কোচ হিসেবে যোগ্য নন স্টিভ রোডস। তার নেতৃত্বগুণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। বলেছেন, দলের প্রয়োজনে সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন তিনি।

রোডসের সঙ্গে বিসিবির ২৩ হাজার ডলার বেতনের চুক্তিটি শেষ হবে ২০২০ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের পর। ইংল্যান্ডের হয়ে ১১টি ওয়ানডে এবং ৯টি টেস্ট খেলেছেন সাবেক এ উইকেটকিপার। কাউন্টির দল উস্টারশায়ারের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন সাকিব আল হাসানের সঙ্গেও। হাথুরুর সঙ্গে হাজারো তিক্ততার পর এমন একজন ‘ভালো মানুষ’ কোচই চাচ্ছিলেন বিসিবি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে খেলোয়াড়রাও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ ভালোমানুষিই কাল হল রোডসের।

জাতীয় দলের এক ক্রিকেটার দৈনিক প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘উনি খুব ভালো মানুষ। কিন্তু, ভালো কোচ নন। টিম মিটিংয়ে ইনি নিজে থেকে একটা ব্রিফও দেন না। দলের কেউ তাকে ভয় পায় না। কোচ হিসেবে যতটুকু সম্মান পাওয়া উচিৎ, সেটিও তিনি পান না।’ প্রতিবেদনে ওই ক্রিকেটারের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এতে আরো বলা হয়েছে, টিম মিটিংয়ে ক্রিকেটারদের মধ্যে গেম প্লান বুঝিয়ে দেয়ার কাজটাও নাকি তিনি করেন না। মিটিংয়ে চুপচাপ বসে থাকেন। গেম প্লান বুঝিয়ে দেন দলের কম্পিউটার বিশ্লেষক শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখর।

বোর্ডের কিছু লোকের অভিযোগ, হাথুরুসিংহের মতো ভালো কোচের গুণাগুণ নেই রোডসের মধ্যে। খেলোয়াড়দের নিজ থেকে ডেকে কখনোই কোন পরামর্শ দেন না তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোচের আরো শক্ত হওয়া উচিৎ, যেটি হাথুরুসিংহের মধ্যে ছিল। শুধু ভালো মানুষ দিয়ে তো হবে না। ভালো কোচও হতে হবে। কথা না বললে, একটু কঠোর না হলে, খেলোয়াড়রাও তো তাকে সমীহ করবে না।’

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের পর বিশ্বকাপেও দল ভালো করছে। আর তাই এমন সময় কোচের যোগ্যতা, দক্ষতা নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা স্বাভাবিক নয়। তাই বিশ্বকাপ চলাকালে বিষয়টি নিয়ে নড়াচড়া করতে চায় না বিসিবি। তবে এরিমধ্যে গুঞ্জন ডালপালা ছড়াচ্ছে, বাংলাদেশ দলে রোডসের সময় হয়তো ফুরিয়ে আসছে।

কিন্তু, বাংলাদেশ দলের সঙ্গে থাকতে চান রোডস। আফগানিস্তান ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলন শেষে রসিকতার ছলেই রোডস বলেছিলেন, ‘আমাকে আর ছয় মাস রাখলে আমি বাংলাটা আরো ভালোভাবে শিখে ফেলতাম’। জবাবে বাংলাদেশের এক সাংবাদিক বলেন, ‘আপনি আমাদের বিশ্বকাপ এনে দিন। আমরা আপনাকে ছয় বছর রেখে দিবো।’ রসিকতা করে হলেও চুক্তির মেয়ার থাকতে তিনি কেন ছয় মাসের কথা বলবেন!

তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে পারলে সময় বাড়তে পারে রোডসের। তবে এ বিষয়ে যেহেতু সরাসরি কেউ কিছু বলতে চাচ্ছেন না তাই বিশ্বকাপ থেকে দল ফেরার পরই হয়তো বুঝা যাবে বাংলাদেশ দলে স্টিভ রোডসের ভাগ্য।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর