হংকংয়ে সাময়িক বিরতির পর ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে বিক্ষোভের আগুন। বৃহস্পতিবার বিতর্কিত প্রত্যাবর্তন আইন বিষয়ক বিল বাতিলের দাবিতে পুলিশ সদরদপ্তর ঘেরাও করেছে হাজারো মানুষ। বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে পিছু হটতে আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ। বলেছে, তাদের এমন কার্যক্রমে জরুরি সেবা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হবে। তবে তাদের দাবিতে সাড়া দেয়নি বিক্ষোভকারীরা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিতর্কিত বিলটির বিরুদ্ধে সহিংস বিক্ষোভ করেছে লাখ লাখ মানুষ। পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা। আহত হয়েছেন অনেকে।
জনতার অব্যাহত চাপের মুখে বিলটি নিয়ে সকল কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে হংকং কর্তৃপক্ষ। জানিয়েছে, এ বিল নিয়ে তাদের আরো চিন্তা করা দরকার। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট হয়নি বিক্ষোভকারীরা। তারা জানিয়েছে, বিতর্কিত ওই প্রত্যাবর্তন বিল বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবে।
বিতর্কিত ওই আইন অনুসারে, প্রত্যাবর্তন চুক্তি না থাকলেও হংকং থেকে যেকোনো আসামিকে চীনসহ যেকোনো দেশে পাঠানো যাবে। এরমধ্যে রয়েছে চীনও। বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা, আইনটি পাস হলে হংকংয়ে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে। প্রাথমিকভাবে সরকারের ভাষ্য ছিল, হংকং যেন অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত না হয়, সেজন্যই এই আইন প্রয়োজন। তবে গত শনিবার ল্যাম জানান, আমাদের কাজের মধ্যে থাকা ঘাটতি ও অন্যান্য বিষয় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আমি এ বিষয়ে গভীরভাবে দুঃখিত ও অনুতপ্ত। তিনি জানান, তার সরকার আপাতত আইনটি সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম স্থগিত রেখে এ বিষয়ে ফের চিন্তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরো জানান, আইনটি সম্পর্কে জনগণকে দেয়া ব্যাখ্যা ও যোগাযোগ পর্যাপ্ত ছিল না।
ল্যাম পূর্বে জানিয়েছিলেন, বাকস্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিতে আইনে বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলা এই আইনের আওতাভুক্ত হবে না। তিনি আরো বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে এই প্রস্তাবিত আইন সঙ্গতিপূর্ণ। শুধু গুরুতর অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবিশেষকেই এই আইন প্রয়োগ করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বিবেচনা করা হবে।
আইনটির সমালোচকরা আশঙ্কা করছেন, এই আইনের কারণে স্বায়ত্তশাসিত এই শহরের ৭৩ লাখ বাসিন্দা, এমনকি এই শহরের বিমানবন্দর ব্যবহারকারী ব্যক্তিবিশেষ চীনের সরকার-প্রভাবিত আদালতের নির্দেশের আওতাভুক্ত হয়ে যেতে পারেন।
Leave a Reply