ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সামরিক অভিযানের ‘পদ্ধতি, লক্ষ্য এবং সময় নির্ধারণের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরমাধ্যমে মোদি হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছেন বলে একটি সূত্র দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানিয়েছে।
মঙ্গলবার মোদির নয়াদিল্লির বাসভবনে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ অব ডিফেন্স অনিল চৌহান এবং দেশটির তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামীকাল বুধবার ভারতের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি (সিসিএস)-সহ চার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডেকেছেন মোদি। এর আগে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা পরামর্শকের সঙ্গে বৈঠক করলেন তিনি।
সূত্রের বরাতে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আবারও বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দেওয়া আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার এবং তিনি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ওপর ‘সম্পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ রাখেন।
এদিকে সশস্ত্র বাহিনীর ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরই মোদির দিল্লির বাড়িতে যান দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও ক্ষমতাসীন বিজেপির আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিলের ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামাতে হামলার পর কাশ্মীরের হামলাটি সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পুলওয়ামাতে হামলার পর ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে সন্ত্রাসী ক্যাম্পে বিমান হামলা চালায়। ভারত দাবি করে, ওই ক্যাম্পটি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের দ্বারা পরিচালিত ছিল এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের সহযোগিতা করেছে।
এ ঘটনার ঠিক ছয় বছর পর কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পাকিস্তান ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সংশ্লিষ্টতা আছে বলে তার একটি ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট হামলার দায় স্বীকার করেছে।
অন্যদিক এই হামলায় ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। যদিও এই দাবি ইসলামাবাদ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বলেছে, কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার একাধিক তথ্য রয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ভারত।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে টানা পঞ্চম দিনের মতো গুলি বিনিময়ের খবর পাওয়া গেছে। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তানের সেনা গুলি চালাতে শুরু করে। ভারত তার জবাব দিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে প্রতি রাতেই কাশ্মীর সীমান্তে গুলি চলছে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ হতাহত হননি।
Leave a Reply