চট্টগ্রাম, ১৯ মার্চ ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে থাকা বড় জাহাজ থেকে আমদানি পণ্য বোঝাইয়ের পর লাইটার জাহাজগুলোকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দরসীমানা ত্যাগ করতে আবারও নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বুধবার আমদানি করা পণ্য খালাসের পর বাজারজাত না করে নদী ও সমুদ্রে জাহাজের মধ্যে ভাসমান গুদামে অবৈধভাবে মজুদ করার বিরুদ্ধে যৌথ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনাকালে এই নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক। কোস্ট গার্ড, নৌ পরিবহন অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এই অভিযান চালায়।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক জানান, রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে এবং বাজারে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে তাদেরকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পণ্য বোঝাই করে গন্তব্যে চলে যাওয়ার জন্য গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ আসলে মানা হচ্ছে কিনা সেটি দেখতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট, নৌবাহিনী কোস্টগার্ড যৌথভাবে বন্দরের সীমানায় অবস্থানরত জাহাজগুলো কখন সেখানে এসেছেন, কখন পণ্য বোঝায় করেছেন এবং কখন তারা চলে যাচ্ছেন সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছেন।
বন্দর সূত্র জানিয়েছে, বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টির উদ্দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমদানি করা পণ্য খালাসের পর তা বাজারজাত না করে লাইটার জাহাজকে ‘ভাসমান গুদাম’ হিসেবে ব্যবহার করে মজুদ করে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু, পণ্য খালাসের পর তা ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় জাহাজে মজুদ রাখা নিষিদ্ধ। তাই, জাহাজে অবৈধ পণ্য মজুদের বিরুদ্ধে বুধবার সকাল থেকে তৃতীয় দফায় অভিযান চালানো হয়।
উল্লেখ্য, রমজানকে ঘিরে অন্যান্যবারের চাইতে এবার অনেক বেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। সবগুলো পণ্য একসাথে বাজারে ঢুকলে দাম পড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে বলে অসাধু ব্যবসায়ীদের ধারণা।
সেজন্য অনেকেই পণ্য বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গুদামজাত এবং চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করা জাহাজ ভর্তি করে ভাসমান গুদামে রেখে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। বাজারে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে লাইটার জাহাজের জট তৈরি করায় নতুন আসা জাহাজগুলো বন্দরে পণ্য খালাস করতে পারছে না। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজের অবস্থান বেড়ে যাচ্ছে।
তিন সপ্তাহের মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে প্রায় ১ হাজারেরও বেশি জাহাজে এই অভিযান চালিয়েছেন জানিয়ে বন্দর সচিব বলেন, সমতলের গুদামে অভিযান করার সুযোগ থাকলেও সাগরে ভাসমান জাহাজে সেভাবে অভিযানের সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা ভাসমান গুদামে জাহাজের মধ্যে পণ্য মজুদ করে রাখেন এরকম অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। মূলত এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জাহাজগুলো যাতে পণ্য খালাস করে ভাসমান গুদামে রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে, সেজন্য নজরদারি করা।
Leave a Reply