বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০৬ অপরাহ্ন

৩,৫০০ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে কানাডায় চলে এসেছে সুমেরুর খেঁকশিয়াল

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ৩ জুলাই, ২০১৯
  • ৪১১ সময় দেখুন

জলবায়ুর পরিবর্তনে ফলে দ্রুত বদলে যাচ্ছে পরিবেশ। টান পড়েছে খাদ্য আর বাসস্থানে। সম্ভবত নিরাপত্তার খোঁজে তাই নরওয়ে থেকে দুই হাজার মাইল (৩,৫০০ কিলোমিটার) পথ পাড়ি দিয়ে কানাডায় চলে এসেছে সুমেরুর খেঁকশিয়াল (আর্কটিক ফক্স)। প্রাণী বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, খেঁকশিয়ালটি দীর্ঘতম পথ পরিক্রমায় স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে নতুন রেকর্ড গড়েছে। সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার পথ পেরোতে তার লেগেছে ৭৬ দিন।

সুমেরু খেঁকশিয়ালের উপকূলীয় উপপ্রজাতির ওই স্ত্রী খেঁকশিয়ালটির দেহে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ‘স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং চিপস’ বসিয়েছিলেন ‘নরওয়েজিয়ান পোলার ইনস্টিটিউটে’র গবেষকেরা। উপগ্রহচিত্রে দেখা যাচ্ছে, গত ২৬ মার্চ নরওয়ের স্ভ্যালবার্ড দ্বীপপুঞ্জের স্পিটবার্জেন শহর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল সে। বাহক ছিল সমুদ্র জমাট বাঁধা একটি বিশাল হিমশৈল। ২১ দিনে ১ হাজার ৫১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গ্রিনল্যান্ডের উপকূলে পৌঁছয়। ১৬ এপ্রিল থেকে শুরু হয় পদব্রজে যাত্রা। নরওয়েজিয়ান পোলার ইনস্টিটিউটের গবেষক ইভা ফুগলেই মঙ্গলবার বলেন, ‘পহেলা জুলাই কানাডার এলিসমেয়ার দ্বীপের কাছে ওই খেঁকশিয়ালটির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে’। তার দাবি, তুষারক্ষেত্র, হিমবাহের ওপর দিয়ে এমন দীর্ঘ পরিযাণের রেকর্ড নেই কোনো স্তন্যপায়ী প্রাণীর।

উপগ্রহচিত্র থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, প্রতিদিন গড়ে ৪৬.৩ কিলোমিটার পথ হেঁটেছে ওই স্ত্রী খেঁকশিয়ালটি। তবে জিপিএস ট্র্যাকার জানাচ্ছে, উত্তর গ্রিনল্যান্ডের চরম প্রতিকূল আবহাওয়ায় কবলে পড়ে একদিনে প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার হেঁটেছিল। ইভার দাবি, গড়ে মাত্র সাড়ে সাত কিলোগ্রাম ওজন হলেও মেরুর খেঁকশিয়ালরা হিমাঙ্কের ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচের তাপমাত্রাতেও খাপ খাইয়ে নিতে পারে। তাই বিস্তীর্ণ তুষারক্ষেত্র পাড়ি দিয়েও এখনও বেশ সুস্থ-সবল রয়েছে সে।

ইভা এবং তার সহ-বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রের দাবি, সুমেরীয় খেঁকশিয়ালদের ক্ষেত্রে এটি দ্রুততম পরিযাণের রেকর্ড। তবে শুধু খাদ্য বা আশ্রয়ের সন্ধান নয়, প্রজননের সঙ্গী খোঁজার জন্যেও সুমেরুর খেঁকশিয়ালরা পরিযায়ী হয় বলে জানিয়েছেন তারা।

নরওয়ের পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী ওলা এলভেস্টল পোলার ইনস্টিটিউটের গবেষকদের স্বাগত জানিয়েছেন। তার মন্তব্য, ‘সমুদ্রে জমা বরফ যে প্রাণীদের যাতায়াতের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ফের প্রমাণিত হল’।

প্রসঙ্গত, গত মাসেই সুমেরু অঞ্চল থেকে কয়েকশো কিলোমিটার পথ উজিয়ে রাশিয়ার শিল্পশহর নরিলক্সে হাজির হয়েছিল একটি স্ত্রী পোলার বিয়ার। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সুমেরু অঞ্চলে খাদ্যের টান পড়াতেই সেখানকার বাসিন্দাদের পরিযাণ-প্রবণতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন প্রাণীবিজ্ঞানীরা।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর