জাহাঙ্গীর আলম-ভ্রাম্যামান প্রতিনিধি, ১৬ মার্চ ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ রবিবার দুপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী এজাজ বিন আলম ওরফে এজাজের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
ধানমন্ডিতে একটি জানাজা শেষে এজাজের মরদেহ টাঙ্গাইলে নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, এজাজ মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, শ্যামলী এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ওরফে ইমনের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন। তার বিরুদ্ধে এক ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে যে কয়জন শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্ত হন, তাদের মধ্যে এজাজ একজন। জেল থেকে মুক্তির পর ইমনের নির্দেশে নানা অপরাধে জড়িত ছিল সে।
গত সোমবার (১০মার্চ) রাজধানীর রায়েরবাজার এলাকা থেকে এজাজকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। পরের দিন (মঙ্গলবার) বিকালে তাকে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এজাজের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকলেও অজ্ঞাত কারণে থানা পুলিশ তাকে ডাকাতির মামলায় আদালতে পাঠায়। পরদিনই আদালত থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায় এজাজ। শীর্ষ সন্ত্রাসী এজাজের জামিন নিয়ে গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর তার সন্ধানে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার ভোরে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন এজাজ ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। পরে চিকিৎসকরা তাকে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করে।
ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার চিকিৎসকরা জানান, এজাজের কিডনি সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। তাকে দ্রুত ডায়ালাইসিস করাতে হবে। বিকালে সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে ডায়ালাইসিস রুমেই এজাজের মৃত্যু হয়। তার মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যান স্বজনরা। পরে পুলিশের সহায়তায় আজ (রবিবার) এজারের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এজাজের অবস্থা শনাক্তের পর তাকে ধানমন্ডির ওই হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। তাকে থানায় কিংবা ডিবি হেফাজতে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। একইসঙ্গে তাকে নির্যাতনের মতো কোনো ঘটনাও ঘটেনি।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এজাজের বিয়ের কথা চলছিল। মেয়েও ঠিক হয়েছিল। ঈদের মধ্যে তার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার কথা ছিল। এজাজের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে এসেছিলেন তার হবু বউও। সেখানে তাকে কান্নাকাটি করতে দেখা গেছে। তাছাড়া উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিল এজাজের।
পুলিশ সূত্র জানা যায়, দীর্ঘদিন কারাভোগের পর ১৫ আগস্ট শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম, পিচ্চি হেলাল ও ইমনের সঙ্গে জামিনে মুক্তি পান এজাজ। মুক্তির পর থেকেই তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
কিছুদিন আগে এলিফ্যান্ট রোডে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার উদ্দেশে গুলি ও কোপানোর ঘটনার মূলহোতা ছিল এই এজাজ। তাছাড়া মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড ও কলাবাগান এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতেন তিনি। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও পিচ্চি হেলাল বর্তমানে পলাতক থাকায় তাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্যাং এজাজের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছিল।
Leave a Reply