রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন

রেলে এক টাকা রোজগারের জন্য আড়াই টাকার মতো খরচ হয় : রেলপথ উপদেষ্টা

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫
  • ১৯ সময় দেখুন

ঢাকা, ২৬ মার্চ ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ বুধবার কমলাপুর রেল স্টেশনে ঢাকা-নরসিংদী-ভৈরববাজার রুটে নতুন এক জোড়া কমিউটার ট্রেন ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী নারায়ণগঞ্জ কমিউটার ট্রেনের রেক প্রতিস্থাপন (মানোন্নয়নকৃত কোচ দ্বারা) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের লোকসান কমোনোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য অপচয় ও দুর্নীতি কমাতে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান। এখানে এক টাকা রোজগারের জন্য আড়াই টাকার মতো খরচ হয়। এটার পেছনে দুইটা কারণ- রেলের দুর্নীতি ও অপচয়। এ অপচয় ও দুর্নীতি কমাতে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

 

তিনি বলেন, ‘রেলের লোকসানের আরও একটি কারণ হলো, বিনা টিকিটে যাত্রী পরিবহন। রেলওয়ে সেবার মূল্য অনেক কম। অনেকেই ট্রেনে উঠে ভাড়া দেন না। এইভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে রেলওয়ের সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাবে। লোকসান বাড়লে রেলের সেবা কমানো ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।’

 

রেলের দুর্নীতির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘রেলের সচিব ও ডিজিকে সুনির্দিষ্ট টার্গেট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা মনিটর করব, এক টাকা উপার্জন করতে কত টাকা খরচ হয়। সেটা অবিলম্বে ২-এর নিচে আনতে হবে। এটা করতে হলে বাধ্য হয়ে তাদের দুর্নীতি কমাতে হবে।’

 

লোকোমোটিভ সংকট সম্পর্কে তিনি বলেন, রেলের লোকোমোটিভ ও কোচের সংকট রয়েছে। পুরোনো কোচ দিয়ে আমাদের ট্রেন চালাতে হচ্ছে। নতুন কোচ সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছি। আজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে চীনে একটি দল যাচ্ছেন। সেখানে রেলের কোচ ও রেল সংক্রান্ত অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে সেখানে আলোচনা হবে।

 

সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে রেল উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার ঢাকার বাইরের শহরের মানুষের প্রয়োজনের দিকে নজর দিচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস উপদেষ্টাদের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার বাইরে উন্নয়ন পৌঁছাতে হবে। আমাদের উন্নয়ন হবে নামফলকবিহীন উন্নয়ন। ফলকে কারও নাম আর থাকবে না, শুধু সময়ের উল্লেখ থাকবে। নামফলকবিহীন উন্নয়নের যুগের সূচনা করতে চাই আমরা।’

 

চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপে ফেরি চলাচল উদ্বোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেখানে সব উপদেষ্টা উদ্বোধনের জন্য যাননি। ঘাট উদ্বোধনের জন্য গেছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এবং আমি গিয়েছিলাম বিআরটিসি বাস সার্ভিস উদ্বোধনের জন্য। বাকি উপদেষ্টা এবং দুই বিশেষ সহকারী তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তদারক করার জন্য গিয়েছিলেন।’

 

ট্রেনের স্টপেজের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘সবাই ট্রেনের স্টপেজ চায় বাড়ির কাছে। তবে আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজের সংখ্যা কম হবে। লোকাল ট্রেনের স্টপেজ সংখ্যা বেশি থাকবে।’

 

অনলাইনে ট্রেনের টিকিটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনলাইনে ট্রেনের টিকিটের বিষয়ে যেসব অনিয়ম ছিল সেগুলোর অনেকটাই কমে গেছে। ঈদের সময় টিকিটের চাহিদা চার-ছয় গুণ বেড়ে যায়। ট্রেনের সংখ্যা না বাড়াতে পারলে ছয়জনের মধ্যে একজন টিকিট পাবে না। তার পরও রেলের কোনো কর্মকর্তা টিকিট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। ইতোমধ্যেই ২২ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

 

এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম বলেন, ‘টিকিটবিহীন কোনো যাত্রী ট্রেনে উঠবেন না। যারা টিকিট ছাড়া ট্রেনে ভ্রমণ করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘ঈদের সময় কোনো ট্রেনে সিট খালি থাকে না। ঈদের সময় প্রতিটি ট্রেনে ২৫ ভাগ স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হয়।

 

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর