ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জাল টাকা উৎপাদন ও বাজারজাতে নেমেছে একটি চক্র। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো কোরবানির হাটসহ বিভিন্ন স্থানে এই টাকা ছড়িয়ে দেয়া। রাজধানীর রামপুরার উলনে জাল টাকার কারখানায় অভিযান চালিয়ে দুই নারীসহ ছয়জনকে গ্রেফতারের পর একথা জানায় গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে প্রায় ত্রিশ লাখ জালমুদ্রা ও মুদ্রা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, গ্রেফতার হওয়া ফাতেমার স্বামী জাল মুদ্রা ও মাদক মামলায় জেলে যাওয়ার পর সে-ও যোগ দেয় জাল টাকার কারবারে। সদস্য ছয় জন। সবারই কাজ ভাগ করা। কেউ কাগজ কাটছে, কারো দায়িত্ব ডিজাইন ও প্রিন্টিংয়ের, কেউ করছেন নিরাপত্তা সূতা লাগানোর কাজ। রাজধানীর রামপুরার উলনের চারতলা বাড়ির ভাড়া করা একটি ফ্ল্যাটে শোবার ঘরেই চলছে এসব কর্মযজ্ঞ।
গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তথ্য ছিলো আগেই। তাই আজ মঙ্গলবার অভিযানে বের হয় হাতে নাতে ধরা পড়ে জাল টাকা তৈরির এই চক্র। গ্রেফতারকৃতরা সবাই স্বীকার করে নিজ নিজ দায়িত্ব। গ্রেফতারকৃত একজন বলেন, আমার কাজ হচ্ছে গ্রাফিক্স এবং প্রিন্টিং করা। প্রথমে আমরা ব্ল্যাংক কাপড়ের উপর জল ছাপ দেই, পরে সুতা লাগিয়ে আঠা দিয়ে জোড়া লাগিয়ে বানানো হয়। তল্লাশিতে বাসায় বিভিন্ন স্থানে লুকানো অবস্থায় লাখ লাখ টাকার জালনোট উদ্ধার হয়। সরঞ্জাম উদ্ধার হয় আরো বেশি। গ্রেফতারকৃতরা বলেন, ঈদের সময় মাল ডেলিভারি করতে সমস্যা হয় তাই ঢাকায় ফাতেমার বাসায় জাল টাকা বানানো হচ্ছে।
পুলিশ বলছে, এদের এই কারখানাটি ছিলো সাভার এলাকায়। কোরবানির ঈদ সামনে মেশিনপত্রসহ ঢাকায় আস্তানা গাড়ে তারা। উদ্দেশ্য সারাদেশে জাল টাকার জোগান দেয়া। অপরাধ তথ্য বিভাগের গোয়েন্দা মশিউর রহমান বলেন, সাভার বা মানিকগঞ্জে তাদের কারখানা গড়ে তাহলে তাদের কেনাবেচায় অসুবিধা হবে। তাই ঢাকায় ফাতেমার বাসায় জাল টাকা বানাচ্ছে।
কোরবানির হাটকে টার্গেট করে আরো কোনো চক্র মুদ্রা জাল করার কাজে নেমেছে কিনা, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে তা বিস্তারিত জানা যাবে বলে আশা গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের।
Leave a Reply