মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:০৯ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ থেকে চাল কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ফিলিপাইন : বলেছেন, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৯
  • ১৯৯ সময় দেখুন

আজ সোমবার সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ফিলিপাইনের সরকারের পক্ষে একটি প্রতিনিধি দল চাল কেনার আগ্রহের কথা জানায়। এসময় বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন চাল রপ্তানিকারকও উপস্থিত ছিলেন। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সিদ্ধ চাল রপ্তানির বাজার খুলছে। দেশের কৃষকদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকার ইতোমধ্যে চাল রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। তার মধ্যেই ফিলিপাইনে চাল রপ্তানির সম্ভাবনার খবরটি এল। দেশটি এখন এক লাখ টন চাল নিতে চাচ্ছে। সরকার-টু-সরকার পদ্ধতিতে এ চাল কিনতে আগ্রহী তারা।

কৃষিমন্ত্রী জানান, এবার বাংলাদেশে চালের উৎপাদন, বিশেষ করে বোরোর উৎপাদন বেশি হয়েছে। বিগত কয়েকটি সিজন আউশ-আমন… আমনে এক কোটি ৪০ লাখ টন টার্গেট ছিল। আর উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ টন। এখন অনেক মিলার-ব্যবসায়ীর গুদামে যথেষ্ট চাল রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এবার বোরোতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম কমে যায়। আমার বলতে কোনো দ্বিধা নাই, এ মুহূর্তে চালের দাম খুবই কম। এজন্য আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমাদের কৃষক-চাষীরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। ধান চাষাবাদ করে তাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, কিছু চাল আমরা বিদেশে রপ্তানি করব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আজ ফিলিপাইন থেকে একটি পার্টি এসেছে। তারা চালের আমদানিতে নিজ দেশের সরকারকে সহযোগিতা করেন। দেশটির সরকারও বলছে, তারা জি-টু-জি (সরকার-টু-সরকার) মাধ্যমে চাল কিনতে পারে। তারা কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন মিলে গেছে, মান দেখেছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশে চালের গুণগত মান ভালো।’

ফিলিপাইনের মানুষ সিদ্ধ চাল খায় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সেটাও আমাদের জন্য ফেভারেবল। কাজেই দেশটিতে সহজেই চাল বিক্রি করা যাবে। আমাদের কিছু মিলারের সাথে আলাপ-আলোচনা করেছে, তারা মনে করেছে দামও মোটামুটি রিজান্যাবল। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড দামের তুলনায় আমাদের চালের যে কোয়ালিটি তাতে দাম মোটামুটি ভালো হবে।’

কৃষিমন্ত্রী জানান, বেলজিয়ামের এক ব্যক্তি ফিলিপাইনে থাকেন। তিনি চালের জন্য দেখা করতে এসেছেন। সোমবার তারা বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথেও দেখা করেছেন। তাদের সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে।

তবে কী পরিমাণ চাল রপ্তানি করা যাবে প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, এ মুহূর্তে বাংলাদেশ চালের উদ্বৃত্তে আছে। দশ লাখ টন চাল রপ্তানি করলেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, যে কোনো সময় বন্যা হতে পারে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে পারে। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গ্রাজুয়ালি যাব। যেমন- আমরা এখন দুই লাখ টন দিয়েছি। আরও যদি চাহিদা আসে আমরা পাঁচ লাখ করব। এভাবে আস্তে আস্তে যাব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘তারা এখন এক লাখ টন নিতে চাচ্ছে। ফিলিপাইন সরকারও (সরকার-টু-সরকার) আমাদের সরকারের কাছ থেকে চাল কিনে নিতে চাচ্ছে। তারা আমাদের মেসেজ দিয়েছে, ফিলিপাইন সরকার আগ্রহী, আমরা রাজি থাকলে তারা আমাদের আমন্ত্রণ করবে বা তারা আসবে।’

চাল রপ্তানিতে সাধারণ মানুষ চাপের মধ্যে পড়বে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, সাধারণ মানুষ কোনো চাপের মধ্যে পড়বে না। কোনোক্রমেই কোনো চাপের মধ্যে পড়বে না।’

দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে ফসলের ক্ষতি হবে কিনা জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এ বন্যা এমন কোনও বন্যা না। বাংলাদেশ বন্যা-খরার দেশ। আমরা ছোটবেলা থেকে পড়েছি, বন্যা আমাদের জন্য আশীর্বাদ, আবার খুব খারাপ হলে অভিশাপ। আর এ মুহূর্তের বন্যায় তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। মাঠেও তেমন কোনো ফসল নেই।’

‘আমাদের বন্যার দরকার আছে দুটি কারণে। আমার যে সেচ ব্যবস্থায় গেছি, এখন নিচ থেকে পানি তুলে খরচ করছি। নতুন ব্যবস্থা পূরণ করতে হলে, বন্যা না হলে, বৃষ্টি না হলে এটা কীভাবে হবে? পানির স্তর আস্তে আস্তে নিচে নেমে যাচ্ছে। আরেকটা হলো, বন্যার পানির সাথে অনেক পলি মাটি আসে, যেটার মধ্যে অনেক নিউট্রিয়েন্ট, অনেক সার আছে। এটাকে ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই।’

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর