শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০৫ পূর্বাহ্ন

প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালার কারণে সমাজে দুঃষ্কৃতকারীরা নানাভাবেই আশকারা পাচ্ছে : রিজভী

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫
  • ৭ সময় দেখুন

ঢাকা, ১৪ মার্চ ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “বর্তমান সময়ে নির্যাতিত আছিয়াকে ধর্ষণের পর মৃত্যুর বিষয়টি কোনোমতেই দেশবাসী মেনে নিতে পারছে না। বর্তমান শাসনকালে মানুষের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূলে অতিদ্রুত আইনের শাসন বলবৎ হবে। কিন্তু প্রশাসনের শ্লথ ও ঢিলেঢালা আচরণের কারণে সমাজে দুঃষ্কৃতকারীরা নানাভাবেই আশকারা পাচ্ছে।”

 

রিজভী বলেন, “বিগত ১৬ বছর দুঃশাসনে আমাদের অতিপরিচিত শান্তি ও সুস্থময় পরিপার্শ্বকে বিকৃত করা হয়েছে, দীর্ঘদিনের বাংলাদেশের সামাজিক সংহতিকে বিনষ্ট করা হয়েছে। দুর্বৃত্তায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে সমাজকে পচা গলিত দুর্গন্ধময় করার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যের জমি দখল, লুট, টাকা পাচারের মহাউৎসবের মধ্য দিয়ে নিজের সিংহাসন অটল রাখতে সব ধরনের নোংরামীকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার শাসনের সমসময়ে হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, নারী, শিশু নির্যাতন, বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর অকথ্য নির্যাতন, রাষ্ট্র ও সমাজের এমনই বিস্তার লাভ ঘটানো হয়েছিল, যাতে সভ্য, শিষ্ট, সজ্জন মানুষের বসবাস করা বিপদজনক হয়ে পড়েছিল। সাধারণ মানুষকে লাঞ্ছিত করতে, দুর্দশায় ফেলতে তারা কোনো দ্বিধা করত না। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে অবমাননা, অতিকথন ও অপপ্রচারের মাধ্যমে বিরতহীনভাবে কালিমা লিপ্ত করার চেষ্টা করেছিল। যাবতীয় ভয়, হুমকি ও দুর্বিপাকের মধ্যেও দেশের নাগরিকদের জীবনযাপন করতে হয়েছে।”

 

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, “সেই রেশ ধরেই এখনো নারী-শিশু নির্যাতনকারীরা যেন সুযোগের অপেক্ষায় ওঁৎ পেতে বসে রয়েছে। সম্প্রতি মাগুরায় বোনের শ্বশুর বাড়িতে বোনের শশুর কর্তৃক ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ, ধর্ষণ করার পর কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থেকে গতকাল তার মৃত্যুবরণ সারা জাতিকে বিমূঢ় বেদনায় বেদনার্ত করেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় সারা জাতির চোখ অশ্রুসজল। দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনে মানবিকতা, নৈতিকতা, নায্যতা, ন্যায়বিচার অদৃশ্য করা হয়েছে। অপকর্মকারীরা অধিকাংশই ছিল শেখ হাসিনার দলের লোক। কারণ এরা জনসেবার চেয়ে আত্মসেবাকেই বড় করে দেখেছে।”

 

রিজভী বলেন, “মানুষের সমবেত ধ্বনি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, কিন্তু সেটি যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেতে থাকবে। আইনের শাসনের শক্ত কাঠামো তৈরি করা হলেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। প্রশাসন যোগ্য, দক্ষ, ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও মানবিক না হলে সমাজে অন্যায়-অবিচার এবং খুন, জখম, নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকোপ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। অবিলম্বে সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন বলবৎ করে সমাজে প্রকৃত দুঃষ্কৃতকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আমরা আবারও জোরালো দাবি করছি, ধর্ষণে নির্যাতিত শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে হত্যাকারীদের ধৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অতি দ্রুত নিশ্চিত করা হোক।” রিজভী আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

 

বিএনপি দেশব্যাপী (৮৪টি সাংগঠনিক রাজনৈতিক জেলা) নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাগুলোর তথ্য সংগ্রহ এবং ‘নিপীড়িত নারী ও শিশুদের আইনি এবং স্বাস্থ্য সহায়তা সেল’ গঠন করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান রিজভী।

 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর