টাঙ্গাইলে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা লেনদেনের সময় পুলিশের এক এসআই ও সাংবাদিকের স্ত্রীকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় এসব তথ্য জানান। আটকরা হলেন- জামালপুর সদর কোর্টের এসআই মোহাম্মদ আলী ও জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার সাংবাদিক খায়রুল বাশারের স্ত্রী শাহানাতুল আরেফিন সুমি। এসআই মোহাম্মদ আলী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের মৃত ইনছান আলীর ছেলে।
পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, শেরপুর সদর থানার তারাগড় নামাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল বারিকের ছেলে ওয়াজেদ আলীর ভাতিজা কবির হোসেনকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য ওই এসআই ও সুমির স্বামী সাংবাদিক খায়রুল বাশারের সাথে চুক্তি হয়। সেই ১০ লাখ টাকা নিয়ে অভিযুক্ত আসামি ও ওয়াজেদ আলী মাইক্রোবাস যোগে গত শুক্রবার জামালপুর থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। গাড়িতে বসেই তারা টাকা লেনদেন করে। পরে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে গাড়িতে বাদীকে রেখে ১০ লাখ টাকা ব্যানিটিব্যাগে করে সুমি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যায়। কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে সুমি নিচে গিয়ে ব্যানিটিব্যাগ থেকে টাকা তার স্বামী কথিত সাংবাদিক খায়রুল বাশারের কাছে দেয়। টাকাগুলো নিয়ে খায়রুল বাশার চলে যায়। বিষয়টি ওয়াজেদ আলী দেখে ফেলায় তার মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে ওয়াজেদ আলী পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে সুমি তাকে জানায় এসপির গেস্ট এসেছে তিনি এখন দেখা করতে পারবেন না।
এরপর সুমির সাথে ওয়াজেদ আলী বাকবিতণ্ডা হয়। তখন ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে ডিবি পুলিশের এসআই ফরিদ উদ্দিনসহ কয়েকজন যাওয়ার সময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওয়াজেদ আলী বিস্তারিত বলেন। তখন এসআই মোহাম্মদ আলী ও সুমিকে আটক করা হয়। এসময় সুমির ব্যাগ থেকে এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা, সুমির স্বামীর নামে সাংবাদিক আইডি কার্ড ও তাদের ব্যবহৃত একটি হায়েজ গাড়ি জব্দ করে। সুমিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বাকি আট লাখ পাঁচ হাজার টাকা তার স্বামী সাংবাদিক খায়রুল বাশারের নিকট আছে বলে জানায়। শনিবার ওই তিনজনের নামে মামলা করা হয়েছে। পরে আটক দুইজনকে আদালতে পাঠানো হয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, আগামী ১ জুলাই টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন থেকে পুলিশ কনস্টেবলে লোক নেয়া হবে। সেখানে সরকারি নির্ধারিত ফি ১০০ টাকা ও ফরম তিন টাকার বিনিময়ে চাকরি প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে কোন অবৈধ টাকা লেনদেন করলে তার বিরুদ্ধে আইনি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply