রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন

দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এ দেশের জনগণ : ভারত, আমেরিকা বা চীন নয় : মির্জা ফখরুল

রিপোর্টার নাম
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫ সময় দেখুন

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরায় ‘রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলামের দূরদৃষ্টিতে ক্ষমতায়ন বাংলাদেশ নেতৃত্ব-ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধি’র পথে কূটনীতি-শাসনব্যবস্থা রূপান্তরমূলক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এ দেশের জনগণ। ভারত, আমেরিকা বা চীন নয়।

 

তিনি বলেন, আমরা সবাই যদি এটুকু বুঝতে পারি, দেশটা আমাদের, এর ভবিষ্যৎ আমাদের নির্মাণ করতে হবে। আমেরিকা থেকে ট্রাম্প (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বা চীন থেকে শি (শি জিনপিং) এসে এটা তৈরি করে দেবে না। অথবা ভারত থেকে মোদিও (নরেন্দ্র মোদি) ধাক্কা দিয়ে আমাদের কিছু করতে পারবে না। এই বিষয়গুলো আমাদের অন্তরের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সফলতা কামনা করি। তবে দেশের স্বার্থ এবং গণতন্ত্র রক্ষায় আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, নিজেদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও দেশের স্বার্থে ১৯৭১ সালে যেমন সবাই এক হয়েছিল, তেমনি ২০২৪ সালেও জনগণ এক হয়ে আন্দোলন করছে। গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই, আর এটি কাউকে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়।

 

শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ড. মুহাম্মদ ইউনূস সফল হবেন বলে আশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তবে এজন্য ড. ইউনূসকে সহযোগিতা করতে হবে।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি প্রফেসর ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। আমার বিশ্বাসও আছে, তিনি সফল হবেন। আসুন, আমরা সবাই মিলে তাকে সাহায্য করি। আমরা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করি।’

 

ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যেদিন ছাত্রদের ওপর রাস্তায় গুলি শুরু হয়েছে, সেদিন কিন্তু সবাই রাস্তায় নেমে এসেছে। ঠিক না? আজকে সেই একইভাবে আসুন, আমরা সবাই এক হয়ে যাই। সমস্যা আছে, সমস্যার সমাধান হবে। ইতোমধ্যে অনেক দূর এগিয়েছে।’

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটা কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রকে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। আপনি আমার ওপর চাপিয়ে দিলেন, তা দেওয়া যাবে না। এটাকে চর্চা করতে হবে। সেই জায়গাগুলোকে ধরে রাখতে হবে।’

 

টকশোর সমালোচকদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, `আমার চারদিকে তাকিয়ে, বিশেষ করে টেলিভিশনের টক-শো, বিদ্যান মানুষদের কথা, রাজনীতির বক্তৃতা সবকিছু মিলে সবাই কেমন যেন একটু হতাশ হয়ে পড়েছেন। এত যে রক্তপাত হলো, এত মায়ের বুক খালি হলো; তার পরিণতি কী হবে শেষ পর্যন্ত? আমি বিশ্বাস করি এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভালো হবে এবং খুব ভালো হবে।’

 

ফখরুল বলেন, ‘কারণ, আমরা বাংলাদেশের মানুষ চিরকাল ভালোর জন্য লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি এবং জয়ী হয়েছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণেরা, আমাদের ছেলেরা; আজকে বাংলাদেশের যা কিছু ভালো অর্জন, সব তাদের জন্য। সেই ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ২৪-এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলন পর্যন্ত, প্রতিটিতেই সামনে ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করেছে আমাদের ছেলেরা। সেখানেই আমাদের শক্তি।’

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করি, তার আগে আমাদের নেতা অনেকে ছিলেন। অত্যন্ত বড় বড় নেতা— মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের একেকজনের একেক চিন্তা ছিল। কারও চিন্তা ছিল সমাজতন্ত্র করবো, কেউ সমাজকে পাল্টে দেবো, কেউ ধর্মীয় ব্যবস্থাকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করবো সব মিলিয়ে ছিল। তারপর যখন যুদ্ধ (মুক্তিযুদ্ধ) শুরু হয়েছিল, তখন সবাই এক হয়েছে লড়াই করার জন্য। আজ ২০২৪ সালেও একই ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা নিয়ে এসেছি সবাই। কিন্তু যেদিন ছাত্রদের ওপর গুলি করা হয়েছে, তখন সবাই এক হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছি।’

 

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম সবুজের মেয়ে সাবরিনা ইসলাম রহমান। আর সভায় সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যানের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর