সিলেট, ২১ মার্চ ২০২৫ইং (ঢাকা টিভি রিপোর্ট): আজ শুক্রবার এবি পার্টি সিলেট মহানগর আয়োজিত শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, গুম, খুন, গণহত্যা, সন্ত্রাসবাদ ও লুটপাটের অভিযোগে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের বিচার, নিষিদ্ধ ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান শুরু থেকেই বিভ্রান্তিকর। এর বাইরে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু নেতার ভূমিকাও বেশ রহস্যজনক। তাদের কেউ কেউ একবার বলছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক তারা চান না; আবার বলছেন, আওয়ামী লীগের নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না। তাদের কারও কারও কাছে এখনই ‘বার বার ফ্যাসিবাদ শব্দ শুনতে ভালো লাগে না’।
তিনি দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের হাতে থাকা থকথকে রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি এবং তাদের একজন সাধারণ কর্মীর কণ্ঠেও ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চেয়ে অনুতপ্ত হওয়ার কোন লক্ষণ নাই। ৬/৭ মাস যেতে না যেতে তাদের হাতে সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত দলের নেতাদের এরকম দ্বিধান্বিত অবস্থান খুবই হতাশাজনক’।
বিলম্ব না করে জাতিসংঘ কর্তৃক খুন, সন্ত্রাসবাদ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের ব্যাপারে একটি ঐকমত্যে পৌঁছার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানান মঞ্জু।
দলের মহানগর আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে বিকেল ৫ টায় নগরীর একটি হোটেলে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সভা সঞ্চালনা করেন এবি পার্টি সিলেট জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ. সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, দৈনিক জালালাবাদ এর সম্পাদক মুততাবিস উন নুর, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলজার আহমেদ হেলাল, টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন ইমজা এর সেক্রেটারি সাকিব আহমদ মিঠু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু সাঈদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, দুর্নীতি মুক্ত করণ বাংলাদেশ ফোরামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মকছুদ হোসেন, এবি পার্টির মহানগর সদস্যসচিব রেজাউল করিম শোয়েব, জেলা সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট হোসাইনুর রহমান লায়েস, যুবনেতা এম তানজিল হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও বলেন, এবারের রমজানে প্রমাণ হয়েছে সরকার যদি প্রশ্রয় না দেয় তাহলে দ্রব্যমূল্য যারা বাড়ায় তারা জনগণের পকেট কাটতে পারেনা। সরকার আরও আন্তরিক ও সিরিয়াস হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
দেশের বাইরে থেকে আওয়ামী লীগের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারত সরকার এসব উস্কানিতে অন্যতম সহযোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। গত তিনটি ভুয়া ও ডামি নির্বাচনে ভারত সরকার ছিল আওয়ামী লীগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তখন তারা আমাদের জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেনি বরং বলেছে এটা নাকি আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এখন তারা বলছে বাংলাদেশে এবার তারা একটা ইনক্লুসিভ নির্বাচন চায়। তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও বলছে আওয়ামী লীগ অংশ না নিলে নাকি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। আকারে ইঙ্গিতে আমাদের সেনাপ্রধানও একই কথা বলছেন।
মঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগ অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে, তবে তার আগে তারা যাদেরকে নৃশংসভাবে খুন করেছে সেই হাজার হাজার সন্তানহারা মায়েদের কোলে তাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিতে হবে। যাদেরকে পৈশাচিক নির্যাতন করে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছে তাদের চোখ, হাত, পা ফেরত দিতে হবে। আমাদের লুট করা লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ফেরত আনতে হবে।
তিনি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অধিকার নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনে গণভোট আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ইফতার মাহফিলে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাঝে উপস্থিত ছিলেন- ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল গফুর বিপ্লব, শ্রমিক নেতা মজিবুর রহমান চৌধুরী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কামাল আহমদ আম্বিয়া, শ্রমিক নেতা মেহেদী হাসান সোহেল, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কৃষি বিষয়ক সহ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান রঞ্জু, যুক্তরাজ্য কমিটির নেতা আব্দুল মুমিত ঝুরু, হবিগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মোকাম্মেল হোসেন রবিন, সুনামগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন, মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক, শরিফুজ্জামান চৌধুরী, যুগ্ম সদস্যসচিব আহমদ খলিল তাপাদার, জেলা যুগ্ম সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
Leave a Reply